শারজাহতে ইতিহাস গড়ল আফগানিস্তান

পাকিস্তানের ১৩০ রান তাড়ায় ম্যাচেই ছিল আফগানিস্তান। তবে শেষ পাঁচ ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে কিছুটা আফগানদের চাপেই ফেলেছিলেন ইহসানউল্লাহ ও নাসিম শাহ।

ইনিংসের ১৮তম ওভারে সেট ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে শেষের নাটকীয়তার ছক আঁকেন ইহসানউল্লাহ। তবে উনিশতম ওভারে মোহাম্মদ নবী ও নাজিব উল্লাহ জাদরান ২ ছক্কায় ১৭ রান তুলে শেষ ওভারে জয়ের হিসাবটা ৬ বলে ৫ এ নিয়ে আসেন।

আর ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিহাসের জন্ম দেন নাজিবউল্লাহ। পাকিস্তানকে টানা দুই টি২০তে হারানোর পাশাপাশি প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের বুনো উল্লাসে মাতে আফগানরা।

রবিবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনীয় জুটিতে ৩০ রান তুলে আফগানিস্তান। ব্যক্তিগত ৭ রানে ওপেনার উসমান গনিকে বোল্ড করে উদ্বোধনীয় জুটি ভাঙেন জামান খান।

দ্বিতীয় উইকেটে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ৫৬ রানের জুটিতে জয়ের কক্ষ পথে ছিল আফগানিস্তান। তবে দলীয় ৮৬ রানে গুরবাজকে রান আউট করে পাকিস্তান শিবিরে ম্যাচে ফেরার আশা জাগান নাসিম শাহ।

রান আউটে কাটা পড়ার আগে গুরবাজ ৪৪ রানের ইনিংস খেলে আফগানিস্তানের জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান গুরবাজ।

এরপর উইকেটে সেট হওয়া ইব্রাহিম জাদরানের বিদায়ে আরেকটা ধাক্কা খায় আফগানিরা। ব্যক্তিগত ৩৮ রানে তাকে ফিরিয়ে ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফেরান ইহাসনউউল্লাহ।

সেই সাথে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আস্কিং রানরেটও বাড়তে থাকে। তবে সেটা আফগানিস্তানের জয়ে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেনি অভিজ্ঞ নবীর সাথে নাজিবউল্লাহ জাদরানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে।

ইনিংসের ১৯তম ওভারে দুজনে একটি করে ছক্কা হাঁকিয়ে সংগ্রহ করেন ১৭ রান। ফলে টি২০তে পাকিস্তান টানা হারানোর পাশাপাশি সিরিজ জিততে শেষ ওভারে আফগানিস্তানের সমীকরণ ৫ রানের।

ওভারের পঞ্চম বলেই দারুণ এক বাউন্ডারিতে জয়সূচক রানটি আসে জাদরানের ব্যাট থেকে। সেই সাথে টানা দুই টি২০তে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করে আফগানিস্তান।

যা ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে পাকিস্তানের বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম সিরিজ জয়। পাকিস্তানের হয়ে ১টি করে উইকেট শিকার করেন ইহসানউল্লাহ ও জামান খান।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে ইমাদ ওয়াসিমের অপরাজিত ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩০ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও সুবিধা করতে পারেননি ওপেনার সাইম আইয়ুব।

আজ ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাইমকে ফিরিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন ফজলহক ফারুকী। ওভারের পরের বলে আব্দুল্লাহ সফিককে ডাক মারান ফারুকী।

প্রায় দিন বছর পর পাকিস্তান টি২০ দলে ফেরা সফিক ফিরেন টানা চার ইনিংসে ডাক মেরে। বিশ্ব ক্রিকেটেই সফিকই প্রথম ব্যাটার যিনি টানা চার টি২০ ম্যাচে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।

অপর ওপেনার মোহাম্মদ হারিসকে দলীয় ২০ রানে সাজঘরে পাঠান নাবিন উল হক। আউট হওয়ার আগেই হারিস অবশ্যই করেন ১৫ রান।

এরপর তায়েব তাহির ও ইমাদ ওয়াসিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে তারুণ্য নির্ভর পাকিস্তান। তবে সেই জুটি ৪০ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি আফগান বোলার করিম জানাতের কারণে।

আফগান এই বোলার দলীয় ৬০ রানে ১৩ রান করা তাহিরকে আউট করে ভাঙেন ৪০ রানের জুটি। তাহির ১৩ রান করতে বল খরচ করেন ২৩টি।

পাকিস্তানের সংগ্রহ একশো পার হয় ইমাদ ও অধিনায়ক শাদাব খানের ব্যাটে। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৭ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ ১৩০ নিয়ে যান ইমাদ ও শাদাব।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে শাদাব ২৫ বলে ৩ চারে ৩৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন শাদাব। আর ফিফটি করে ৬৪ রানেই অপরাজিত থাকেন ইমাদ। ৫৭ বলে ৩ চার এবং ২ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান ইমাদ।

আফগানিস্তানের পক্ষে ৪ ওভারে ১৯ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন ফজলহক ফারুকী। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন নাবিন উল হক, রশিদ খান ও করিম জানাত।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *